Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

হর্টেক্স ফাউন্ডেশন : অর্জন ও উদ্যোগ

হর্টেক্স ফাউন্ডেশন : অর্জন ও উদ্যোগ
মো. মনজুরুল হান্নান
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে এ ভূখন্ডের মানুষ খাদ্যের অভাবে ভুগতেন। দেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্য চাহিদা মেটাতে সক্ষম হতো না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য অধিক ফসল উৎপাদনের ডাক দেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শাকসবজি, ফলমূলের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ছিল কম। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সবজি ও ফলমূলের উৎপাদন বাড়তে শুরু করে এবং বিভিন্ন দেশে তা রপ্তানি হতে শুরু করে। উৎপাদক এবং রপ্তানিকারকদের মধ্যে দুর্বল সংযোগ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সক্ষমতা না থাকার কারণে শাকসবজি রপ্তানি বাধার সম্মুখীন হচ্ছিল। এসব বিষয় সমাধানের জন্য একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার তীব্রতা সংশ্লিষ্ট মহল অনুধাবন করতে থাকে। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৩ সালে হর্টিকালচার এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন সংক্ষেপে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি অলাভজনক এবং কোম্পানি আইনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। এটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতা এবং নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে।
লক্ষ্য
প্রযুক্তি ও বিশেষায়িত পরামর্শমূলক সেবা দানের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতি ও কৃষকের আয়বৃদ্ধিতে রপ্তানির জন্য উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্যসহ কৃষি ব্যবসা উন্নততর ও বহুমুখী করা।
উদ্দেশ্য
গুণগত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন তাজা, প্রক্রিয়াজাতকৃত ও হিমায়িত শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য কৃষিপণ্য উৎপাদন, সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা এবং বাজারজাতকরণে কৃষক, উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, বাজার তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তা সেবা প্রদান।
মূল কার্যক্রম
তাজা শাকসবজি, ফলমূল,আলু, হিমায়িত এবং প্রক্রিয়াজাতকৃত কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষক রপ্তানিকারকসহ অন্যান্য অংশীজনদের দক্ষতা উন্নয়ন; বাজার জ্ঞান/বুদ্ধিমত্তা এবং ব্যবসা পরিকল্পনা প্রণয়নে রপ্তানিকারক ও উদ্যোক্তাদের সহায়তা; রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষক, রপ্তানিকারকসহ অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি; রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন সেবা প্রদান; অংশীজনদের প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি বাণিজ্যকে টেকসই করতে সহযোগিতা করা। 
চুক্তিবদ্ধ চাষাবাদের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন করা এবং খামার তথ্যাদি সংরক্ষণে কৃষক, রপ্তানিকারক ও কৃষি ব্যবসায়ীকে সহায়তা; হটেক্স ফসলের সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গুণগত মানসম্পন্ন সবজি ও ফল দেশে-বিদেশে বিপণনের সুযোগ সৃষ্টি করে; সংগ্রহোত্তর অপচয় রোধ করতে  কৃষক ও সরবরাহ শৃঙ্খলের অংশীজনদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা; নতুন ধারণা এবং সময়োপযোগী রপ্তানিমুখী কৃষি গবেষণা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা এবং কৃষি বাজার বিশ্লেষণ, বিভিন্ন উপাত্ত সংগ্রহ ও সমীক্ষা করে কৃষি বাজার উন্নয়নে সহায়তা করা। কর্মশালা, সেমিনারের মাধ্যমে বিশেষায়িত জ্ঞান আহরণ ও প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে উদ্বুদ্ধ করা।

অর্জন এবং উদ্যোগ
হর্টেক্স ফাউন্ডেশন শুরু থেকেই সবজি ও ফল রপ্তানিকে প্রাধান্য দিয়ে বেশ কিছু সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এসব উদ্যোগ এবং অর্জনের সারসংক্ষেপ নিম্নরূপ-
১৯৯৬ সালে হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের সহায়তায় চান্দিনা এবং কালিগঞ্জ এলাকার বেশ কিছু কৃষক এবং ব্র্যাকের সাথে চুক্তির মাধ্যমে রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করানো হয়। হর্টেক্স ফাউন্ডেশন আইডিএ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্র্যাককে সহযোগিতা করে ব্র্যাককে ১০,০০০ মেট্রিক টন সবজি ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করতে ভূমিকা রাখে। সবজির ভ্যালু চেইন উন্নয়নে উৎপাদন উপকরণ সরবরাহসহ অংশীজনদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদান করে। সে সাথে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বিক্রয় কেন্দ্র (গ্রামীণ প্যাক হাউজ) স্থাপন করে সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসলের সংগ্রহোত্তর অপচয় হ্রাস করার সাথে সাথে সবজি ও ফলের গুণগতমান ও নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সবজি রপ্তানি ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য হর্টেক্স ফাউন্ডেশন ৫ লক্ষ কার্টুন/প্যাকেট বিনামূল্যে এবং স্বল্পমূল্যে কৃষিপণ্য রপ্তানিকারকদের নিকট সরবরাহ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা করে আসছে। শাকসবজি, ফলমূল প্যাক হাউজ থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন সেবাপ্রদান অব্যাহত রেখেছে।
সবজি রপ্তানি উন্নয়নে হর্টেক্সফাউন্ডেশন ১৯৯৬ সাল হতে সরাসরি কৃষিপণ্য রপ্তানি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের সাথে তাদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে। জ্ঞান ও দক্ষতা উনয়নের জন্য এ পর্যন্ত ৩১১৬৫ জন কৃষককে রপ্তানির জন্য ফসল উৎপাদন, সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। কৃষিপণ্য রপ্তানি উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পের নির্দিষ্ট বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) ২০৫ জন কৃষি ক্যাডার অফিসারকে টিওটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি ক্যাডার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫৪০ জন কর্মকর্তাকে ভ্যালু চেইন উন্নয়ন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ডিএই এর ৬৩০ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ ৩৭২০ জন প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন সদস্য এবং ১২০০ জন বিভিন্ন শ্রেণীর কৃষিপণ্য ব্যবসায়ীকে তাদের দক্ষতা উনয়নের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ৪১ জন কর্মকর্তা, রপ্তানিকারক ও কৃষককে বিভিন্ন দেশে কৃষি বাজার সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেয়ার জন্য সফর করানো হয়েছে। সাইট্রাস ক্যাংকার রোগের জন্য ২০০৮ সালে বাংলাদেশ হতে ইউরোপে লেবু রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে যৌথভাবে কাজ করে ২০১১ সালে পুনরায় লেবু রপ্তানি শুরু হয়। এজন্য হর্টেক্স ফাউন্ডেশন ১০ কেজি ঝঙচচ চীন থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের নিকট হস্তান্তর করে। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে উত্তম কৃষি চর্চা অনুসরণ করে এফএও, ডিএই এবং হর্টেক্স ফাউন্ডেশন এর যৌথ সহায়তায় দীপ ইন্টারন্যাশনাল নামের রপ্তানিকারক প্রথমবারের মতো ডঅখগঅজঞ অঝউঅ সুপার শপ ইউকেতে আম রপ্তানি করতে সক্ষম হয়। মারুহিশা প্যাসিফিক কোম্পানি লিমিটেডের অনুরোধে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন ডিএই শেরপুরের সহযোগিতায় জাপানি মিষ্টিআলু ধহহড়নবহর এর মাঠ পরীক্ষা সম্পন্ন করে। মিষ্টি আলুর জাতটি এখন আবাদ এবং রপ্তানি হচ্ছে।
কৃষিপণ্য রপ্তানি উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট ১৩০টি কর্মশালা, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম সফলভাবে আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া ফসলের ভ্যালু চেইন, বাজার সমীক্ষা বিষয়ে ৪১টি তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ঘঅঞচ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ২২টি জেলার ৩০টি উপজেলায় ৩০টি কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র (সিসিএমসি) এবং ৩০টি কালেকশন পয়েন্ট স্থাপন করে ডিএই এর সহায়তায় সিআইজি কৃষকদের নিয়ে ফসলের ভ্যালু চেইন উন্নয়ন এবং সম্মিলিতভাবে বাজার সংযোগ উন্নয়নের কাজ চলছে। এসব মডেল গ্রামীণ প্যাক হাউজ (সিসিএমসি) হতে ৩০,০০০ টন নিরাপদ ও গুণগত মানসম্পন্ন সবজি ও ফল দেশের অভ্যন্তরে বিপণন করা হয়েছে ও ২৫০০ টন বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এ কার্যক্রমটি এখন চলমান আছে। হর্টেক্স ফাউন্ডেশন কৃষিপণ্যের উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যবসা ইনকিউবেশন সেন্টার হিসেবে কাজ করতে যাচ্ছে। এ ছাড়া এ প্রতিষ্ঠানটিকে ফসলের ভ্যালু চেইন ও রপ্তানি উন্নয়নের “সেন্টার অব একসিলেন্স” প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। 
বাংলাদেশ সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, পদক্ষেপ ও কৌশলের কারণে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- কৃষিপণ্য উৎপাদনের বৃদ্ধির সাথে সাথে বিদেশে যাতে পণ্যের সুখ্যাতি বৃদ্ধি পায় সেভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে। হর্টেক্স ফাউন্ডেশন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে কৃষিপণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির কাজ অক্লান্তভাবে করে যাচ্ছে।

লেখক : ব্যবস্থাপনা পরিচালক, হর্টেক্স ফাউন্ডেশন, সেচ ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, ঢাকা। ফোন : ৪৮১১৩২৩৯, ই-মেইল : hortex@hortex.org


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon